খেজুরের উপকারিতা

আজ আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করব খেজুরের উপকারিতা নিয়ে। মহানবী হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খেজুর খেতে অনেক বেশি পছন্দ করতেন এবং উনি উনার খাবারের বেশিরভাগ চাহিদা খেজুরের মাধ্যমে সমাধান করার চেষ্টা করতেন।
খেজুর খেলে একদিকে যেমন রাসুলের সুন্নত পালন করা হয়, অপর দিকে খেজুরের রয়েছে হাজার ধরনের উপকারিতা, যা বিস্তারিতভাবে আজ আপনাদের সাথে আলোচনা করতে চাই…

খেজুরের উপকারিতাঃ

খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম ও জিংক। যে খাবারে একসাথে এতগুলো পুষ্টি উপাদান এর সংমিশ্রণ থাকে, তাই আমরা নির্দ্বিধায় আমাদের খাদ্যতালিকায় খেজুর রাখতে পারি।
যারা ডায়েট চার্ট তৈরি করেন শরীরের ওজন হ্রাস করতে তারা কিন্তু খেজুর খেতে পারেন নির্দ্বিধায়। কারণ এটি আপনার শরীরের ফ্যাট না বাড়িয়ে শরীরের সকল ধরনের পুষ্টি উপাদানের চাহিদা পূরণ করার সামর্থ্য রাখে।
শরীরে আয়রনের অভাব পূরণ করতে খেজুরের উপকারিতাঃ
প্রতিটা মানবদেহে যে পরিমাণ আয়রনের চাহিদা থাকে দৈনিন্দিন তার প্রায় ১১শতাংশ পূরণ করতে পারে খেজুরের মাধ্যমে। শুধুমাত্র দৈনন্দিন খাবারের তালিকায় দুই-তিনটি খেজুর রাখলে আমাদের আয়রনের চাহিদা পূরণ হয়ে যায়। তার মানে বুঝতে পারছেন প্রতিটি খেজুরে কি পরিমান আয়রনের থাকে।

সুগার লেভেল এর মাত্রা ঠিক রাখতে খেজুরের কার্যকারিতাঃ
যাদের শরীরের রক্তে সুগার লেভেল এর মাত্রা কম বেশি থাকে অর্থাৎ যারা ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত, যারা চিনি খেতে পারেন না। চিনির বিকল্প হিসেবে আপনারা কিন্তু খেজুর খেতে পারেন।
কারণ খেজুর মিষ্টি হলেও সেটি কিন্তু সুগার লেভেলস বাড়ায় না। তাই আপনারা চিনির বিকল্প হিসেবে খেজুর খেতে পারেন অথবা খেজুরের গুড় খেতে পারেন।
রমজানের সময় শরীরে এনার্জি আনতে খেজুরের কাজঃ
সারাদিন রোজা রেখে আমরা যখন ক্লান্ত হয়ে পড়ি, আমাদের শরীরে যখন শক্তি থাকে না বললেই চলে, শর্করা যখন একেবারে সর্বনিম্ন পর্যায়ে চলে যায়, তখন ইফতারিতে আমরা মাত্র কয়েকটি খেজুর খেলে সাথে সাথেই কর্মোদ্দীপনা জাগিয়ে তুলতে পারি। কারণ খেজুরে প্রচুর পরিমাণে শর্করা থাকে যা আমাদের শরীরকে কর্মোদ্দীপনার সাথে চাঙ্গা করে তুলতে সাহায্য করে।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে খেজুরের উপকারিতাঃ
কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা যাদের রয়েছে তারা কিন্তু নির্দ্বিধায় খেজুর খেতে পারেন। রাতে ঘুমানোর আগে কয়েকটা খেজুর খেলে সকালবেলায় আপনাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
এছাড়াও খেজুরে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। এটি আমাদের শরীরকে ওজন হ্রাস করা থেকে রক্ষা করে
শরীরের রক্ত সঞ্চালন ঠিক রাখতে খেজুরের ভুমিকাঃ
নিয়ম মেনে খেজুর খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারলে আমাদের শরীরের রক্ত সঞ্চালন যেমন ভালো থাকে, আমাদের মস্তিষ্ক কিন্তু অনেক উন্নত হয়। মস্তিষ্কের সেলগুলো জীবিত থাকে এবং আমরা পূর্ণ উদ্যমে কাজ করার স্পৃহা খুঁজে পায়।
অন্যান্য উপকারিতাঃ
এছাড়াও আমাদের দাঁতকে গোড়া থেকে শক্ত করতে এবং হার্ট কে মজবুত রাখতে, আর চোখের দৃষ্টিশক্তি স্বাভাবিক রাখতে এবং ত্বকে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হলে তা দূর করতেও কিন্তু খেজুর দারুণভাবে উপকার করে থাকে।
কাজ করার ফাঁকে ফাঁকে যাদের খুব বেশি খিদা লাগে তারা কিন্তু খেজুর ছাড়া অন্য খাবার খেলে ফ্যাট বাড়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই আপনারা খাবারের বিকল্প হিসাবে খেজুর খেতে পারেন।
তাহলে বন্ধুরা, আপনারা বুঝতে পারলেন সামান্য কিছু খেজুর এর মাধ্যমে আমরা আমাদের শরীরকে কত দিক দিয়ে রক্ষা করতে পারি।
তাই খাদ্য তালিকায় অবশ্যই স্বল্পমূল্যের এই খেজুর রাখার ক্ষেত্রে যাতে কোনো ধরনের ভুল আমাদের না হয়। এটি বাজারে খুব বেশি পাওয়া যায় এবং দামে অনেকটা কম। তাই আমাদের উচিত আমাদের খাদ্য তালিকায় খেজুর রাখা।

Leave a Comment