সিদ্ধ ডিম খাওয়ার আশ্চর্য উপকারিতা গুলো জানলে প্রতিদিন একটি করে ডিম খাবেন

আমাদের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় যে সকল খাবার আমরা রাখি আমাদের দৈহিক বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করার পাশাপাশি সুষম খাদ্যের অভাব পূরণ করার জন্য তার মধ্যে ডিম কিন্তু অন্যতম। সিদ্ধ ডিম হল প্রাণিজ আমিষের একটি প্রধান উৎস ।

সিদ্ধ ডিমের উপকারিতাঃ

আমাদের শরীরে সুষম খাদ্যের অভাব পূরণের জন্য যে সকল খাদ্য উপাদান দরকার হয় তার প্রায় সবটুকু উপাদানই কম বেশি পরিমাণে সিদ্ধ ডিমে পাওয়া যায়।

সিদ্ধ ডিমের মধ্যে থাকা ভিটামিনের উৎস সমূহঃ

যদিও সিদ্ধ ডিম ভিটামিন এ এর প্রধান উৎস, তারপরেও ভিটামিন এ এর পাশাপাশি ভিটামিন বি,’ ভিটামিন ডি এবং ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ফসফরাস ও প্রয়োজনীয় নানা ধরনের খাদ্য উপাদান কিন্তু আমরা পেয়ে থাকি।

খাদ্য উপাদানের মধ্যে শুধু ভিটামিন-সি সেদ্ধ ডিমের মধ্যে অনুপস্থিত থাকে। আর বাকি সব ধরনের খাদ্য উপাদান খুব সহজে একটি ডিমের মধ্য দিয়ে আমরা পেয়ে থাকি।

শরীরে শক্তি সঞ্চয়ে সিদ্ধ ডিমের উপকারিতাঃ

প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় শুধুমাত্র একটি ডিম রাখার মধ্য দিয়ে আমরা কিন্তু শরীরের ক্যালরি চাহিদা পূরণ করতে পারি। এবং সারা দিনের কর্মব্যস্ততায় যে পরিমাণ শক্তি আমাদের খরচ হয় তা কিন্তু খুব সহজে আমরা সঞ্চয় করে রাখতে পারি খাদ্য তালিকায় শুধুমাত্র একটি সিদ্ধ ডিম রাখার মধ্য দিয়ে।

শরীরে ক্যালরির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ রাখতে সিদ্ধ ডিমের উপকারিতাঃ

যারা খুব বেশি শরীর নিয়ে সচেতন অর্থাৎ ডায়েট এর মধ্যে যারা থাকে তারা কিন্তু তাদের খাদ্য তালিকায় সিদ্ধ ডিম রাখতে পারেন। কারণ খাদ্যতালিকায় সিদ্ধ ডিম রাখলে এটি আমাদের শরীরে ক্যালরির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং খুব তাড়াতাড়ি ক্ষিধার যে প্রবণতা তা কমিয়ে দিয়ে আমাদের শরীরের বাড়তি মেদ জমতে দেয় না।

আয়রনের অভাব পূরণ করতে সিদ্ধ ডিমের উপকারিতাঃ

সিদ্ধ ডিম কিন্তু আমাদের শরীরে আয়রনের অভাব পূরণ করতেও দারুন ভাবে কাজ করে থাকে। তাই আমাদের শরীরে যখন রক্তস্বল্পতা দেখা দেয় অর্থাৎ আয়রনের ঘাটতি দেখা যায়, যখন আমাদের শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা যখন কমে যায়, তখন আমাদের খাদ্য তালিকায় অবশ্যই সিদ্ধ ডিম রাখা উচিত। কারণ সিদ্ধ ডিমে যে পরিমাণ আয়রন থাকে তা আমাদের শরীরের আয়রনের অভাব পূরণ করে। যার ফলে  আমাদের শরীরের রক্তের ভারসাম্য স্বাভাবিক থাকে এবং শরীরে আয়রনের অভাব পূরণ করে থাকে।

গর্ভবতী বা প্রস্তুতি মায়েদের ক্ষেত্রে সিদ্ধ ডিমের উপকারিতাঃ

প্রসূতি মেয়েদের যখন বাচ্চা প্রসব হয় যখন প্রচুর পরিমাণে রক্ত বের হয়ে যায়। তখন কিন্তু খাদ্য তালিকায় অবশ্যই সিদ্ধ ডিম রাখা উচিত। এতে শরীর থেকে বের হয়ে যাওয়া রক্তস্বল্পতা যেমন পূরণ করে, তার পাশাপাশি শরীরের দুর্বলতা কাটাতে সাহায্য করে। এবং শরীর থেকে যে পরিমাণ ক্যালোরি দূর হয়ে যায় খুব তাড়াতাড়ি সিদ্ধ ডিম তার ঘাটতি পূরণ করতেও সাহায্য করে।  

পিরিয়ড কালীন সময়ে সিদ্ধ ডিমের উপকারিতাঃ

নারীদের যখন পিরিয়ডের সময়ে চলে তখন শরীর থেকে রক্ত বের হয়ে যাওয়ার কারণে শরীরে রক্ত স্বল্পতা দেখা দিতে পারে এবং শরীর অনেক বেশি দুর্বল অনুভব হতে পারে। এই সময় খাদ্যতালিকায় সিদ্ধ ডিম রাকা উচিত। কারণ এতে আমাদের শরীরের যে সকল খাদ্য উপাদান বা প্রয়োজনীয় উপাদানের ঘাটতি দেখা দেয় তা খুব তাড়াতাড়ি পূরণ করতে সাহায্য করে।

বয়সন্ধিকালে সিদ্ধ ডিমের উপকারিতাঃ

ছেলে বা মেয়েদের যখন বয়সন্ধিকাল চলে অর্থাৎ ঋতুপরিবর্তন হয় তখন হরমোনের তারতম্য যখন অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পায় তখন শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে আমিষ এর দরকার হয়। আর এই সময়ে প্রাণিজ আমিষের মধ্যে ডিম কিন্তু খুব বেশি কার্যকর ভূমিকা রাখে।

তাই বাড়ন্ত বয়সে ছেলে ও মেয়েদেরকে বয়সন্ধিকালীন সময়ে খাদ্যতালিকায় বাধ্যতামূলকভাবে সিদ্ধ ডিম রাখতেই হবে। এটি তাদের দৈহিক বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে। তার পাশাপাশি তাদের মানসিক বৃদ্ধি সহ তাদের স্নায়ুবিক বিকাশ ঘটাতে সাহায্য করে।

হরমোন জনিত সমস্যা সমাধানে সিদ্ধ ডিমের উপকারিতাঃ

এছাড়াও আমাদের শরীরের বিভিন্ন হরমোন জনিত সমস্যার কারণে অল্প বয়সে চুল পাকা, চুল পড়ে যাওয়া, চুল পড়ে গিয়ে মাথা পুরোটা খালি হয়ে যাওয়া অথবা অসময়ে পিরিওড হয়ে যাওয়া এ ধরনের হরমোন জনিত সমস্যা যখন দেখা দিবে, তখন বুঝতে হবে আমাদের খাদ্য তালিকায় অবশ্যই আমিষের অনিয়ম রয়েছে।

আর এই সময় আমাদের অবশ্যই খাদ্যতালিকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে আমিষের সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। আর সেই ক্ষেত্রে সিদ্ধ ডিমের মতো উন্নত ও  বিকল্প আর কোন কিছু হতেও পারে না। তাই আমাদের সকলের উচিত উপরুক্ত অসুবিধাগুলো যাতে আমাদের জীবনে না আসে তাই আমাদের খাদ্য তালিকায় সিদ্ধ ডিম রাখা উচিত।

 

Leave a Comment