স্যালাইন খাওয়ার উপকারিতা 

এক প্যাকেট স্যালাইন খাওয়ার মাধ্যমে আপনার সারাদিনের দুর্বলতা কেটে যেতে পারে। এই কথাটা আপনারা অনেকবার শুনেছেন। কিন্তু আসলে স্যালাইন আমাদের শরীরে কি কি কাজে লাগে সে সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি না। তাই আজকে আমার আলোচনার বিষয় হচ্ছে স্যালাইন খাওয়ার উপকারিতা কি??????

স্যালাইন খাওয়ার উপকারিতাঃ

শুধু কি ডায়রিয়া হলে স্যালাইন খাওয়া যায়??????

বা দুর্বলতা কাটানোর জন্য??????

এই দুইটা কাজ ছাড়া কি স্যালাইনের আর কোনো কার্যকারিতা নেই। যা আমাদের শরীরে উপকার করে থাকে???

হ্যাঁ বন্ধুরা, এই বিষয়গুলো সম্পর্কে ধারণা দিতে আজকে আমার প্রতিবেদনটি লিখা। যারা কঠোর পরিশ্রম করেন, বা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করেন, তারা অবশ্যই আমার এই প্রতিবেদনটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়বেন। আশা করি আজকের এই প্রতিবেদন পড়ার মাধ্যমে আপনাদের অনেক ধরনের সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।

কেন আপনি স্যালাইন খাবেন????

স্যালাইন এর মধ্যে থাকা উপাদানগুলো আমাদের মানব শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা তখনই স্যালাইন খায় যখন আমাদের শরীরে লবণ এবং পানির পরিমাণ কমে যায়। অর্থাৎ যখন শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দেয় তখনই আমরা স্যালাইন খাওয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে থাকি। 

ডায়রিয়ার সময় স্যালাইন এর কার্যকারিতাঃ

আমাদের ডায়রিয়া বা অতিরিক্ত পাতলা পায়খানা যখন হয়ে থাকে, তখন আমাদের শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে খনিজ পদার্থ বের হয়ে যায়। যার মধ্যে পানি এবং লবণ এর পরিমাণ বেশি। যখন এই খনিজ পদার্থ পাতলা পায়খানার মাধ্যমে বের হয়ে যায়, তখন আমাদের শরীরে প্রচুর পরিমাণে পানি শূন্যতা দেখা যায়। তখনই স্যালাইন আমাদের শরীরে পানি শূন্যতা পূরণ করতে কাজ করে।

ইনস্ট্যান্ট শরীরের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে স্যালাইন এর ভূমিকাঃ

দীর্ঘক্ষন কাজ করার পরে যখন ক্লান্তি ভাব চলে আসে বা শরীর থেকে প্রচুর ঘাম বের হয়ে যায়, তখন আমাদের শরীরে বা মনে অবসাদ চলে আসে। এই মুহূর্তে যদি আধা লিটার পানিতে একটি স্যালাইনের প্যাকেট গুলো করে আমরা খেতে পারি, সাথে সাথে আমাদের শরীরে কার্যক্ষমতা ফিরে আসে।

মাথা ব্যাথা বা মাথা ঘোরানো রোধ করার জন্য স্যালাইনের উপকারিতাঃ

দীর্ঘক্ষন জার্নি করে আসার পরে বা অতিরিক্ত গরমে কাজ করার ফলে শরীর অনেক বেশি ঝিমিয়ে পড়ে এবং মাথা ব্যাথা ও মাথা ঘুরানোর মতো কিছু সমস্যা দেখা যেতে পারে। তখন যদি আপনি এক প্যাকেট স্যালাইন খেতে পারেন তাহলে আপনার মাথা ব্যাথা বা মাথা ঘুরানোর মত সমস্যার সাথে সাথে দূর হয়ে যাবে।

হজমে সহায়তা করতে স্যালাইন এর ভূমিকাঃ

যাদের খাবার ঠিকভাবে হজম হয়না বা পরিপাকতন্ত্রের সমস্যা দেখা যায় তাদের জন্য একটা জার্নালের প্রতিবেদন আকারে প্রকাশ করা হয়েছিল যে, যাদের পরিপাকতন্ত্রের সমস্যা দেখা যায় স্যালাইন পরিপাকতন্ত্রের নালী গুলোকে পরিষ্কার করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। তাই হজমের সমস্যায় স্যালাইন আমাদের শরীরে কার্যকরীভাবে ভূমিকা পালন করে।  

রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে স্যালাইন এর কার্যকারিতাঃ

যাদের শরীরে রক্তচাপ হঠাৎ করে কমে যায় বা একেবারে ঝিমিয়ে পড়ে, ক্লান্ত হয়ে যায়, তারা যদি সাথে সাথে খাবার স্যালাইন খেতে পারে তাহলে তাদের রক্তের চাপ নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। এই কারণে যাদের প্রেসার লো হয়ে থাকে তাদের স্যালাইন খাওয়ানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা।

স্যালাইন ডায়াবেটিসের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখেঃ

যাদের শরীরে অতিরিক্ত পরিমাণে শর্করা বেড়ে গিয়ে ডায়াবেটিসের মাত্রা বাড়িয়ে ফেলে, তারা নিয়ম করে স্যালাইন খেতে পারেন। স্যালাইনে থাকা  লবন বা সোডিয়াম  শরীরের শর্করা বৃদ্ধিতে বাধা দিয়ে থাকে। তাই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে স্যালাইন এর ভূমিকা রয়েছে।

সতর্কতাঃ যাদের শরীরে হাই প্রেসার রয়েছেন তারা কিন্তু স্যালাইন খাওয়ার সময় খুবই সতর্ক থাকবেন। কারণ স্যালাইনের মধ্যে থাকা লবণ আমাদের রক্তের চাপ বাড়িয়ে দিতে কাজ করে। তাই যাদের শরীরে রক্তচাপ বেশি তারা স্যালাইন খেতে সতর্ক থাকুন।

আশা করি আজকের প্রতিবেদনের মাধ্যমে আপনারা স্যালাইনের গুরুত্ব বুঝতে পেরেছেন এবং প্রয়োজন অনুযায়ী শরীরের কথা চিন্তা করে ক্লান্তি বা অবসাদ দূর করতে অথবা শরীরে পানি শূন্যতা পূরণ করতে স্যালাইন নিয়মিত সঙ্গে রাখার চেষ্টা করুন।

 

 

 

Leave a Comment