আনার খেলে মিলবে যে সকল উপকারিতা

বিভিন্ন ধরনের ফলের মধ্যে যে কয়েকটি ফল আকারে ছোট হওয়ার পরেও শরীরের অনেক বেশি উপকার সাধন করে থাকে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে আনার।

আনার ফল কে আমরা আরও বিভিন্ন নামে চিনে থাকি। কেউ আনার ফল কে বেদানা, ডালিম আরো অন্যান্য নামে চিনে থাকে। আমাদের দেশে আনার এর উৎপাদন খুব একটা নেই। বেশিরভাগ আনার দেশের বাহিরে থেকে আমদানি করতে হয়। যার কারণে এর দাম অনেক বেশি।

দাম অনেক বেশি হওয়ায় আনারের চাহিদা বাজারে তুলনামূলকভাবে অন্যান্য ফলের তুলনায় কম। আপনি যদি আজ আমার এই প্রতিবেদনটি পড়ে থাকেন, তাহলে অবশ্যই আপনার নিত্য প্রয়োজনীয় খাবারের তালিকায় একটি হলেও আনার রাখবেন। কারণ আনারের উপকারিতা আমাদের শরীরে অনেক বেশি।

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে আনারের উপকারিতাঃ

আনারে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান যা অন্যান্য ফলের তুলনায় অনেক বেশি থাকে। মাত্র ১ কাপ আনারের দানার মধ্যে রয়েছে ৩০% ভিটামিন সি। যা আমাদের শরীরের ভিটামিন সি এর ঘাটতি পূরণ করতে যথেষ্ট।পাশাপাশি রয়েছে ৩৬% ভিটামিন কে, এবং ১২% পটাশিয়াম।এছাড়াও আনারের মধ্যে থাকা এন্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান শরীরের আরো নানা রোগ থেকে আমাদেরকে দূরে রাখার কাজ করে।  

শরীরের ইউরিক এসিডের পরিমাণ কমাতে আনারের উপকারিতাঃ

আনার বা ডালিম শরীরে ইউরিক এসিডের পরিমাণ কমায়। আর এর মধ্যে থাকা এন্টি অক্সিডেন্ট উপাদান আমাদের রক্তের মধ্যে গিয়ে রক্ত বিশুদ্ধ করার কাজ করে। তার ফলে হাড়ের সংযোগস্থলের যে ব্যথাগুলো হয় এই ব্যাথা গুলা থেকে উপসম করতে অনেক বেশি উপকারী।

উচ্চ রক্তচাপ কমাতে ডালিমের উপকারিতাঃ

ডালিমের রস আমাদের শরীরের উক্ত উচ্চ রক্তচাপ কমাতে কাজ করে।  ডালিমের মধ্যে থাকা এন্টি অক্সিডেন্ট উপাদান আমাদের উচ্চ রক্তচাপ কমিয়ে ফেলে। তাই যারা উচ্চ রক্তচাপ জনিত সমস্যায় ভুগছেন তারা নিয়মিত খাবারের তালিকায় একটি করে ডালিম রাখার চেষ্টা করুন।

হজম প্রক্রিয়া স্ট্রং করতে ডালিমের উপকারিতাঃ

যাদের হজমের সমস্যা আছে, বা  কোন কিছু খেলেই হজমে দুর্বলতা দেখা যায় বা ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা যায়, তারা ডালিম সাথে রাখতে পারেন। কারন ডালিমের রস এর মধ্যে থাকা এন্টি অক্সিডেন্ট উপাদান হজম প্রক্রিয়া স্বাভাবিক রাখতে কাজ করে।

ডালিম খাওয়ার মাধ্যমে আয়রনের অভাব পূরণ হয়ঃ

ডালিম বা আনার এর মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন। মানুষের শরীরে যখন রক্তস্বল্পতা দেখা দেয় অথবা রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে যায়, তখন আমাদের খাদ্য তালিকায় অবশ্যই ডালিম রাখা উচিত।  আর এটি বাস্তব ক্ষেত্রেও প্রমাণিত। কারণ যারা এই রোগে ভোগে ডাক্তার খাদ্যতালিকায় প্রধানত ডালিম রাখার ওপর জোর দিয়ে থাকেন। কারণ ডালিমে থাকা আয়রন শরীরের রক্তস্বল্পতা দূর করে রক্তের পরিমাণ স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে।  

ডালিম শরীরের ক্যালসিয়াম খনিজ পদার্থ পূরণ করতে কাজ করেঃ

ডালিমে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম এবং খনিজ পদার্থ থাকার কারণে এটি আমাদের শরীরের হাড্ডি শক্ত সমর্থ রাখতে সহায়তা করে। এজন্য বাড়ন্ত বয়সের শিশুদের বয়সন্ধিকালীন সময়ে তাদের খাদ্যতালিকায় অবশ্যই ডালিম রাখা উচিত। কারণ এই সময় দৈহিক বৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয় আর তখন হাড়ের সুষ্ঠু বিকাশ সাধনের জন্য খাদ্যতালিকায় অত্যাবশ্যক ভাবে ডালিম রাখা উচিত।

রিকেটস রোগ থেকে বাঁচতে আনারের উপকারিতাঃ

যাদের রিকেটস রোগ হয়ে থাকে, হাড় বেঁকে যাওয়া ও অন্যান্য শারীরিক অক্ষমতা যাদের দেখা যায়, তারা কিন্তু ডালিম খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন। কারন এটি আমাদের উপরোক্ত উপসর্গ গুলো কমিয়ে ফেলতে অনেকটা সাহায্য করে।

স্মৃতিশক্তি বাড়াতে ডালিমের উপকারিতাঃ

ডালিম কিন্তু আমাদের স্মৃতিশক্তিকে স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। দীর্ঘদিন ও নিয়মিত ঘুমের কারণে বা অতিরিক্ত পরিমাণে স্ট্রেস নেওয়ার কারণে অথবা আমাদের শৃঙ্খলাহীন জীবনের অভ্যাস গড়ে তোলার কারণে আমাদের স্মৃতি শক্তি অনেকটা কমে যায়। আর এই স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়ার কারণে আমাদের বিভিন্ন ধরনের মানসিক অবসাদ হওয়া শুরু করে।

সুতরাং ডালিম আমাদের জন্য অনেক বেশি উপকারী চেষ্টা করবো নিয়মিত খাবার তালিকায় অন্তত পক্ষে একটা হলেও যেন ডালিম থাকে।

 

 

 

 

 

 

Leave a Comment